রংপুরে আন্দোলনে নিহত হওয়ার মিলনের মরদেহ দাফনের ৫৮ দিন পর, ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করা হয়েছে। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে, নগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ময়নাতদন্ত শেষে আবারও মরদেহ দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ জুলাই ছাত্র আন্দোলনের সময় রংপুর সিটি বাজারের সামনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে প্রাণ হারান মোসলেম উদ্দিন মিলন। সেসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাপে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করে পরিবার।
পরে এ ঘটনায় গত ২৮ আগস্ট হত্যা মামলা দায়ের করেন মিলনের স্ত্রী দিলরুবা। মামলায় সাবেক বিভাগীয় কমিশনার, সাবেক ডিআইজি, সাবেক পুলিশ কমিশনার’সহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও শতাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিটি বাজার এলাকায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষ হয়। এ সময় ৮ থেকে ১৭নং আসামিদের প্ররোচনা ও উসকানিতে ১ থেকে ৭নং আসামিদের নির্দেশে ২, ৩, ৪, ৬ ও ৭নং আসামিসহ হেলমেট পরিহিত পুলিশ সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে। এতে মিলন গুলিবিদ্ধ হলে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে আসামিদের চাপে লাশের ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়।
এদিকে মামলা দায়েরের ৫ দিন পর গত ১ সেপ্টেম্বর মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে সাবেক বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন এবং সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানের নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেন মামলার বাদী নিহত মুসলিম উদ্দিন মিলনের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার। সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মোফাজ্জল হোসেন বকুল।
মরদেহ উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ সাদাত বলেন, আদালতের নির্দেশে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নিহত মুসলিম উদ্দিন মিলনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।