ছাতকের জাহিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে বহিরাগত কতৃক ক্লাশ চলাকালিন সময়ে হামলা, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও শিক্ষকদের লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার সকাল আনুমানিক ১১ ঘটিকার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিকসহ অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শ্রেনী কক্ষে গিয়ে পাঠদান শুরু করেন। এ সময় দোলারবাজার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ এর সাবেক সাধারন সম্পাদক গোপিনাথপুর গ্রামের বহিরাগত আনর আলীর নেতৃত্বে আরজু মিয়া, নুর উদ্দিন, আজব আলী, বাদশা মিয়া, হারুন মিয়াসহ কয়েকজন বিদ্যালয় মাঠে প্রবেশ করেন। তাদের পিছু পিছু বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কিছু অভিভাবকও প্রবেশ করেন। এ সময় তারা সরাসরি বিভিন্ন শ্রেনীকক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের বের হয়ে আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। শ্রেনী শিক্ষকরা এতে বাঁধা প্রদান করলে শিক্ষকদের উপর চড়াও হন তারা। এক পর্যায়ে কিছু কিছু শিক্ষার্থীদের মাঠে বের করে নিয়ে আসা হয় এবং বিদ্যালয় মাঠে সমবেত হয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক এর পদত্যাগ দাবি করেন তারা। অপরদিকে বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ মানি না বলে মিছিল করেন। এ সময় প্রতিপক্ষ বহিরাগত আনর আলীর নেতৃতে শিক্ষার্থীদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও শিক্ষকদের লাঞ্চিত করার ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইমা আক্তার মীম, সায়মা, সায়মনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানান, পাঠদান চলাকালিন সময়ে তারা শ্রেনীকক্ষে প্রবেশ করে আমাদের উপর অত্যাচার করেন, শিক্ষার্থীদের টেনে হেচড়ে শ্রেনীকক্ষ থেকে বের করে নিয়ে যান। বিদ্যালয়ের মাঠে প্রধান শিক্ষক জনাব আব্দুল মালিক স্যারের পদত্যাগ দাবি করেন। আমরা এর প্রতিবাদ করলে আমাদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক শামীম উদ্দিন, বশির উদ্দিন, আব্বাস আলী বলেন, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্টানে বহিরাগতদের এ ধরনের হামলা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। শিক্ষার্থীদের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত ও শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত স্বাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট দাবি জানান তারা। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আবাব মিয়া ও বাবুল চন্দ্র রায় বলেন, প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবৎ সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ রয়েছেন। কিন্ত পরিতাপের বিষয় এভাবে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্টানে নৈরাজ্য সৃষ্টি, শিক্ষকদের লাঞ্চিত ও শিক্ষার সুষ্ট পরিবেশ বিনষ্ট করা কোনভাবেই কাম্য হতে পারেনা। এ বিষয়ে বিদ্যালেয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আনর আলী ঘটনা স্থলে উপস্থিত থাকার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমি শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রন করে নিয়ে এসেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমার কোন ছেলে মেয়ে বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছেনা।
এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা মুন্না ব্যস্ত থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।