বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় গত তিনদিন ধরে পিরোজপুরে মুশালধরে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। এ ছাড়া অতিবৃষ্টিতে উপজেলার চারটি ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও আমন ধানের খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। জোয়ারে নদীতে বেড়েছে পানির উচ্চতা। এতে আতঙ্কে রয়েছেন উপক‚লের মানুষ। শনিবার সকাল ৬টা থেকে আজ রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় পিরোজপুরে জেলায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বর্ষনে জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার নদমুলা, ইকড়ি, তেলিখালী, ধাওয়া নিন্মাঞ্চল দেড় থেকে দুই ফুট পানির নিচে প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টিার কারণে বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে লোকাল সড়কে যোগাযোগ বিছিন্নি হয়ে পড়ে।
গত শুক্রবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয় এ জেলায়। এরপর থেকে টানা তিনদিন কখনো মুষলধরে আবার কখনো থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। টানা বর্ষণে শহরের বেশ কয়েকটি সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের মাঠ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেড়েছে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ। শহরে সীমিত আকারে যানবাহন চলাচল করলেও মানুষের উপস্থিতি কম। চরম বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।
এদিকে গত দুইদিন ধরে জেলায় বেড়েছে লোডশেডিং। শহরের কিছুটা সময় বিদ্যুৎ থাকলেও গ্রামাঞ্চলে তীব্র আকার ধারণ করেছে লোডশেডিংয়ের মাত্রা। এতে ব্যাহত হচ্ছে নিত্যদিনের কার্যক্রম। ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম জানান বৃষ্টিতে শহরের রাস্তাঘাট অলিগলি তলিয়ে গেছে। এমন অবস্থায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পানি নামতে না পারায় দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না অনেকেই। তবে জীবিকার তাগিদে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হয়েছেন রিক্সা ও অটোচালকরা। কিন্তু শহরে মানুষের উপস্থিতি কম হওয়ায় যাত্রী পাচ্ছেন না তারা। এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঘর থেকে বের হতে না পেরে বেশি বিপাকে পরেছেন শ্রমজীবী মানুষেরা। শহরের বেশকিছু দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলেননি ব্যবসায়ীরা। যেসব দোকান খোলা আছে, তাতে লোকজনও কম। এদিকে বিদ্যুৎ গ্রামগঞ্জে বিদ্যুত না থাকায় অটোগাড়ি ও রিক্সায় চার্জ দিতে না পাওয়া তারা গাড়ি নিয়ে বিপাকে পরেছে।
অতিবৃষ্টির কারণে কচা ও পোনা নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় খাল-বিলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সদ্য রোপণ করা আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে ধানের খেত টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন কৃষকেরা।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. নজরুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘন্টায় পিরোজপুর জেলায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বৃষ্টির ফলে জনজীবনে সমস্যা হচ্ছে। ফসলি জমি প্লাবিত হলেও ভাটার টানে পানি নেমে গেলে আমনের কোন ক্ষতি হবেনা। তবে পানি বেড়ে জমে থাকলে আমনের ক্ষতি হবে।