করোনা মহামারির পর এই মুহূর্তে বৈশ্বিক আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে মাঙ্কিপক্স। আফ্রিকা ছাড়িয়ে ইউরোপ ও এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি। গত মাসেই ভাইরাসটির সংক্রমণের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক জরুরি সতর্কতা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। মহামারির আকার ধারণ করার আগেই ভাইরাসটি মোকাবিলার জন্য এবার প্রথম টিকার অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র থেকে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে চলতি বছর। এ দেশটিতেই মাঙ্কিপক্সের প্রথম টিকা এমভিএ-বিএন পৌঁছানোর পর এর প্রাথমিক অনুমোদন দিল ডব্লিউএইচও।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বিবৃতিতে বলেন, ‘মাঙ্কিপক্সের প্রথম টিকার প্রাথমিক অনুমোদন ভাইরাসজনিত রোগটি মোকাবিলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। এখন আমাদের টিকা সংগ্রহ ও বিতরণে গতি বাড়াতে হবে। এই রোগের সংক্রমণ, বিস্তার এবং এতে প্রাণহানি ঠেকানোর জন্য যেসব স্থানে টিকা এখন সবচেয়ে জরুরি, সেসব স্থানের মানুষ যাতে সবার আগে টিকা পান, আমাদের তা নিশ্চিত করতে হবে।’
ডব্লিউএইচওর প্রাথমিক অনুমোদনের অর্থ এখন মাঙ্কিপক্সের এই টিকার মান, সুরক্ষা ও কার্যকারিতার বিষয়টি যাচাই করে দেখা হয়েছে। সংস্থাটির প্রাথমিক অনুমোদন থাকায় এই টিকা জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থা সংগ্রহ করতে পারবে। এর পাশাপাশি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো স্বল্প আয়ের দেশগুলো নিজেরা টিকার মান, সুরক্ষা ও কার্যকারিতা যাচাইয়ে সময় অপচয় না করে দ্রুত টিকা সংগ্রহ করতে পারবে।
চলতি বছরের শুরুতে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে প্রথম মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। গত জানুয়ারি থেকে দেশটিতে প্রায় ২২ হাজার মানুষের মধ্যে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত হয়ে ৭১৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পর আফ্রিকার দেশগুলোতেও মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। পরে ইউরোপ ও এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। চলতি বছর ভাইরাসটির নতুন ধরন ক্লেড১ বি বেশি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত মাসে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ নিয়ে আন্তর্জাতিক জরুরি সতর্কতা জারি করে ডব্লিউএইচও। ভাইরাসটি মোকাবিলায় এবার প্রাথমিকভাবে প্রথম টিকার অনুমোদন দিল সংস্থাটি।