ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশে প্রতিটি ঋতুই আলাদা রূপ নিয়ে আসে, এর মধ্যে শরৎকাল অন্যতম। ভাদ্র-আশ্বিন মাস জুড়ে শরৎ ঋতুর আগমনী বার্তা নিয়ে আসে শুভ্র কাশফুল। কুড়িগ্রামের চিলমারীর চরাঞ্চল এ শরতে কাশফুলের শুভ্রতায় সেজে উঠেছে, যা যে কারও মনকে প্রশান্তি দেবে। এই অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই প্রকৃতি প্রেমিরা ভিড় জমাচ্ছেন চিলমারীর চরাঞ্চলের কাশবনগুলোতে।
চিলমারীর তিনটি ইউনিয়ন—চিলমারী, নয়ারহাট ও অষ্টমীরচর—ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিভাজিত। এই ইউনিয়নগুলোর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে নদীর ভাঙা-গড়ার খেলা চলে, আর এসব চরাঞ্চলে শরৎকালে কাশফুলের সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ে। এখানকার কৃষকরা কাশিয়াবন থেকে অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন দেখছেন, আর প্রকৃতি প্রেমিরা উপভোগ করছেন অপার সৌন্দর্য।
প্রতিদিন কাশবন ঘিরে ভিড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রকৃতি প্রেমিরা। দূর্গম চরাঞ্চল হওয়া সত্ত্বেও, ব্রহ্মপুত্রের বুকের সাদা কাশফুল বাতাসে দুলছে, যা দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শনার্থীরা। কখনো কালো মেঘ, কখনো সাদা-নীল মেঘের খেলা এ সৌন্দর্যে আরও শোভা বাড়াচ্ছে।
নয়ারহাট ইউনিয়নের কৃষক মাহফুজার রহমান জানান, চরাঞ্চলের এক বিঘা জমি থেকে প্রায় ১৬০০ থেকে ২০০০ কাশিয়ার আটি পাওয়া যায়, যা ১০-১২ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতি বিঘা জমি থেকে ১০-১৫ হাজার টাকা আয় করা যায়, যা কার্তিক মাসের অভাব দূর করতে সহায়তা করে।
প্রকৃতি প্রেমি আলমগীর হোসাইন, শান্ত বাবু, মুশফিকুর হাসান মাহি, বায়জিদ হাসান বাপ্পি, সাগর সরকার বিধানসহ আরও অনেকে জানান, কাশফুল দেখতে তারা প্রায়ই নৌকা ভাড়া করে চিলমারীর বিভিন্ন চর ঘুরে আসেন। সকালে এসে কখন যে দুপুর পেরিয়ে বিকেল হয়ে যায়, তা মনেই থাকে না। রংপুর থেকে আসা তন্ময় সরকার জানান, কাশফুলের সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করেছে।
প্রকৃতি প্রেমিরা মনে করছেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় চিলমারীর চরাঞ্চলে পর্যটন শিল্প বিকাশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।