বরিশালের বানারীপাড়ায় বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে প্রয়াত সৈয়দ শহিদুল হক জামাল সমর্থিতদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় বিএনপি নেতারা দাবি করছেন, জামাল বাহিনীর সদস্যরা বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। বরিশাল-২ আসনের বিএনপি নেতা এস সরফুদ্দীন আহম্মেদ সান্টুর বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে জামাল বাহিনীর অন্যতম সন্ত্রাসী মিথ্যা ও অপপ্রচার চালাতে শুরু করলে বিএনপির পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা তা প্রতিরোধে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানান।
সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখির সূত্র ধরে অনুসন্ধান করা হলে জানা যায়, ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সৈয়দ শহিদুল হক জামাল বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। তবে, তার নামে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে ওঠে, যারা বিরোধীদের দমন-নিপীড়ন, দখল ও চাঁদাবাজি করত।
জামাল বাহিনীর অত্যাচারের কারণে বানারীপাড়া ও স্বরূপকাঠির অনেক সংখ্যালঘু পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। বিরোধীদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, পুকুরের মাছ, ইটের ভাটা, এবং গরু দখল করে নেওয়াসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিল এই বাহিনী।
জামালের চাচাতো ভাই মোফাক্কের এবং তার ছেলে নিক্সনের নেতৃত্বে ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগও উঠেছে। তাদের অত্যাচারে সন্ধ্যার পরে এলাকার মা-বোনেরা ঘর থেকে বের হতে ভয় পেতেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর জামাল পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং জাতীয় সংসদের হুইপ নিযুক্ত হন। তবে, তার সম্পদের ব্যাপক লোপাট ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, যা নিয়ে মামলা পর্যন্ত হয়েছে।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে জামাল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন এবং তার বাহিনীর কারণে বিএনপির প্রার্থী পরাজিত হয়। পরবর্তী নির্বাচনগুলোতেও জামাল বাহিনী একই কায়দায় বিএনপির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সহযোগিতা করে।
সম্প্রতি ২৪’র ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে জামাল বাহিনী আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং বিএনপি নেতা এস সরফুদ্দীন আহম্মেদ সান্টুর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
এদিকে, সৈয়দ শহিদুল হক জামালের ছেলে ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইফুল হক সাইফকে বাইশারী সৈয়দ বজলুল হক কলেজের এডহক কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচিত করার প্রতিবাদে গত ৬ অক্টোবর কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা বিক্ষোভ মিছিল করে তার অপসারণের দাবি জানান।