১১ অক্টোবর,: ২০২৪ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে জাপানের তৃণমূল সংগঠন **নিহন হিদানকিও**, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমা ও নাগাসাকির পারমাণবিক বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত। নোবেল কমিটির ঘোষণায় জানানো হয়, পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের প্রচেষ্টায় এবং পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করে আসা এই সংগঠনকে সম্মানিত করা হয়েছে।
নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, **হিবাকুশা** নামেও পরিচিত নিহন হিদানকিও পারমাণবিক অস্ত্রের বিপর্যয়কর মানবিক পরিণতি সম্পর্কে বিশ্বকে সচেতন করতে যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তা প্রশংসনীয়। সংগঠনটি পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার যে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য, তা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছে এবং পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের জন্য কাজ করে চলেছে।
নোবেল কমিটি আরও বলেছে, পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতা সম্পর্কে হিরোশিমা ও নাগাসাকির জীবিতদের সাক্ষ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের অভিজ্ঞতা বিশ্বজুড়ে সচেতনতা তৈরি করেছে এবং মানুষকে পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে একত্রিত করেছে।
ঘোষণায় বলা হয়, প্রায় ৮০ বছর ধরে কোনো যুদ্ধেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার হয়নি, যা একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি এবং নতুন দেশগুলোর পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা উদ্বেগজনক। এ কারণে, এই মুহূর্তে পারমাণবিক অস্ত্রের বিপর্যয়কর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
নিহন হিদানকিও, যা ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচারণা চালিয়ে আসছে। সংগঠনটি জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিয়মিতভাবে পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান তুলে ধরেছে এবং শান্তি সম্মেলনগুলিতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছে।
নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিহন হিদানকিও ও হিবাকুশা প্রতিনিধিদের এই অব্যাহত প্রচেষ্টা বিশ্বকে শান্তি ও নিরাপত্তার পথে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতা এবং ধ্বংসাত্মক প্রভাব সম্পর্কে তাদের সতর্কবার্তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করছে।
নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি নিহন হিদানকিওর এই অসাধারণ অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে বলেছে, তাদের প্রচেষ্টা মানবজাতির বৃহত্তর কল্যাণে বিশেষভাবে অবদান রাখছে, যা আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছার সাথে সম্পূর্ণভাবে সঙ্গতিপূর্ণ।