রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালের ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বিভিন্ন খাতে মালামাল ক্রয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঔষধ, এমএসআর সামগ্রী, গজ-ব্যান্ডেজ, কেমিক্যাল রিএজেন্ট, এক্সরে ফিল্ম, ফার্নিচার ও কিচেন সামগ্রীসহ বিভিন্ন খাতে কোটি টাকার দরপত্র আহ্বানকে কেন্দ্র করে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে কোনো বরাদ্দ ছাড়াই ৮টি গ্রুপে দরপত্র আহ্বান করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এস.এম.এ হান্নান। গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত দরপত্রে বিধি বহির্ভূতভাবে ট্রেড লাইসেন্স ও সামগ্রীর নমুনা জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়, যা আগ্রহী ঠিকাদারদের নিরুৎসাহিত করেছে।
স্থানীয় ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন, ই-টেন্ডার প্রথা চালু থাকলেও পছন্দের ঠিকাদারদের সুবিধা দিতে গোপন পাসওয়ার্ড সরবরাহ করা হয়, ফলে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।
এ নিয়ে মাগুরার প্রসিদ্ধ ঔষধ ব্যবসায়ী মোঃ আজিজুল হক গত ২৩ সেপ্টেম্বর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন, যা পরবর্তীতে আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তিনি রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে টেন্ডারে বেআইনী শর্তারোপের অভিযোগে হাইকোর্টে রিট পিটিশন (নং ১১৬৪৫/২০২৪) দায়ের করেন।
৩০ সেপ্টেম্বর, হাইকোর্টের বিচারপতি মোঃ কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তিন মাসের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিত করেন এবং চার সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে, উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক ডা. এস.এম.এ হান্নান পছন্দের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ডা. হান্নানের বিরুদ্ধে রাজবাড়ীতে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলা বিচারাধীন রয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে চড়া সুদে নগদ টাকা ধার দেওয়ার অভিযোগে আরও একাধিক মামলা চলছে। আদালতে উপস্থিতি ও মামলার কারণে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।