অবিবাহিত নারীর নাম দিয়ে মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকা উত্তোলন, গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারসহ, কাবিখা, বিভিন্ন প্রকল্পের নামমাত্র কাজ করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ, ভুয়া রেজুলেশন করে ইউপি উন্নয়ন সহায়তা খাতে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন না করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের মাহমুদুল হক নাহিদ সিকদারের বিরুদ্ধে।
কাঁঠালিয়া উপজেলায় ৪নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ সিকদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
অবিবাহিত নারীর নাম দিয়ে মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকা উত্তোলন, গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ‘টিআর’ ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারসহ ‘কাবিখা’ বিভিন্ন প্রকল্পের নামমাত্র কাজ করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ, ভুয়া রেজুলেশন করে ইউপি উন্নয়ন সহায়তা খাতে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন না করে তিন লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির তালিকাভুক্ত শ্রমিকদের কাছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন বলে জানান শ্রমিকরা। টাকা দিতে না পারায় অনেক শ্রমিককে বাদ দেয়া হয় ওই কর্মসূচি থেকে।
চেয়ারম্যানের এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ” সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ প্রদান করেন শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। এর আগেও ওই চেয়ারম্যানের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্থানীয়রা অভিযোগ করলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওই ইউনিয়ন পরিষদের সংস্থার করার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ প্রদান করা হয়, কিন্তু সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বন্ধু হাওয়ায় ও দলীয় লোক তাই কিছু কাজ করিয়ে পুরো টাকাটাই হাতিয়ে মাহমুদুল হক নাহিদ সিকদার সিকদার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কাবিটা প্রকল্পের আওতায় সদরে সার্বজনীন মন্দিরের মাটি ভরাট ও সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় সেই টাকা, কিন্তু নামমাত্র কাজ করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেছে চেয়ারম্যান ও ওই প্রকল্পের টাকা বরাদ্দ হয়েছে সে বিষয়ে মন্দিরের সভাপতি-সেক্রেটারি জানেন না কেউই।
সভাপতি-সেক্রেটারির দেখা না পেলে বরাদ্দের বিষয়ে কথা হয় মন্দির কমিটির সঙ্গে।তিনি বলেন, ‘আমরা কেউই জানি না কত টাকা বরাদ্দ হয়েছে। একদিন চেয়ারম্যান মন্দিরের মাঠে বালি ভরাটের কথা থকলেও কোনো কাজ করেনি,
শুধু প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ নয়, চেয়ারম্যান নাহিদ সিকদারের বিরুদ্ধে মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদানেও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ।
এমন প্রায় ১৪ জন ভুক্তভোগীর দাবি, তালিকায় নাম থাকলেও সুবিধাভোগীরা ভাতা পাননি। চেয়ারম্যান ভাতার জায়গায় নিজস্ব অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে সেই টাকা তোলেন বলেও অভিযোগ তাদের।
এদিকে ২০২২-২৩- ২০-২৪ অর্থবছরে ইউপি উন্নয়ন সহায়তা খাতে তিনটি প্রকল্প দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার কাজ না করেই সম্পূর্ণ টাকা তুলে নেন চেয়ারম্যান। বিষয়ে চেয়ারম্যানের নামে সাবেক নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দেন মনজুরুল কবির নামে এক ব্যক্তি।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এলাকার উন্নয়নের জন্য যেসব বরাদ্দ দিচ্ছে চেয়ারম্যান তা নিজের উন্নয়নে লাগাচ্ছেন। ভুয়া রেজুলেশন করে নামমাত্র কাজ করে ইউপি উন্নয়ন সহায়তা খাত থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।অভিযোগের বিষয়ে সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে জরুরি কাজ আছে বলে ইউনিয়ন পরিষদ ত্যাগ করেন তিনি।প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে কথা হয় কাঠালিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেন, ‘কাজ না করে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার সুযোগ নেই। যদি এমন হয়ে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।চেয়ারম্যানের এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সদর ইউনিয়নের ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ লিখিত অভিযোগ পেলে,তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।কাঁঠালিয়া শ্রমিক লীগের সভাপতি জয়নাল আবেদীন মাসুম বলেন আমারা নিবার্চনের সময় প্রচুর টাকা খরচ করেছি। সেই টাকা এখন তুলতে হবে। তাই সেবা পেতে হলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে।
আলীর ব্যাপক অনিয়ম ও সীমাহীন দুর্নীতির কারণে পরিষদের সদস্যসহ ইউনিয়নবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ সিকদার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। তার আমলে টিআর, কাবিখা, জিআর, কাবিটা, ভিজিডি, এডিবি, এলজিএসপি, ননওয়েজ, লজিক, ইজিপিপি, পরিষদের রাজস্ব খোযাড়-খেয়া ইজারার অর্থ, ইউপি ট্যাক্স, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ফি, হাটবাজার, ১% খাতের নিজের খেয়ালখুশি মতো ব্যবহার করে থাকেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের কোনো সদস্যের সঙ্গে আলোচনা না করে নিজের ইচ্ছামতো খরচ করেন। অপরদিকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডপ্রতি সরকারি খরচ ১৫ টাকা থাকা সত্ত্বে দুবারে কার্ডে এন্ট্রি বাবদ অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। ফলে ইউনিয়ন পরিষদ অর্থ লুটপাট ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। তিনি তার নিজ বাড়িতে অফিস খুলে পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেন, এবং ভুয়া রেজুলেশন করেন। প্যানেল চেয়ারম্যান তৈরি করেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। এমনকি একাধিকবার লাঞ্ছিত, অবরুদ্ধ ঘটনাও বাদ পড়েনি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মসজিদ, মক্তব, মাদ্রাসা, ঈদগাহ মাঠসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সরকারি অনুদানের টাকা ও বিভিন্ন গ্রামে সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দেওয়ার নামে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। অপর দিকে ভিজিডি তালিকা প্রণয়নে ঘুস গ্রহণসহ ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউপি চেয়ারম্যনের বদির বাহিনী তৈরি করে ভিজিডি তালিকায় নাম উঠানোর কথা বলে অসহায় দুস্থদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুস গ্রহণ করছেন। বাদ পরেনি বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতাও। শামুক সংরক্ষণ ইংলিশ প্রজেক্ট এর গরু ও ছাগল দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি সাত হাজার টাকা নেয় মাহমুদুল হক নাহিদ সিকদার। সদরের সাধারণ মানুষের কাজ থেকে শ্রমিক লীগের সভাপতি জয়নাল আবেদীন মাসুম, ইউনিয়ন পরিষদের দালালি মানুষকে হুমকি চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী, বিএনপি’র ২০-৪ সালে বেতাগী উপজেলায় জনসভা বোমা মারে মাসুম, ২০১৮ সালে কাঠালিয়া উপজেলা বিনপির পোস্টার লাগানো সময় মারধর করে, উপজেলা মোড়ে বিএনপির অফিস ভাঙচুর করে ,
প্রথম পর্ব চোখ রাখুন দ্বিতীয় পর্ব।