ঢাকা, শনিবার, ১২ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, সন্ধ্যা ৬:৪৯
বাংলা বাংলা English English

শনিবার, ১২ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হেরে গেছেন ড. ইউনূস! “নোবেল” ও “রাষ্ট্র পরিচালনা” কি এক? ছাত্র-জনতা ও বিরোধী দলের কি হবে?


অরাজনৈতিক, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যেসব ভুলের কারণে এবং বিরোধী দল গুলোর আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তোলার কারণে প্রতি বিপ্লব করে আবারো ফিরে আসছে হয়তো পতিত স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠীটি? সেটার কিছু প্রমাণ সহ বর্তমান সরকারের দুর্বলতা গুলো চিহ্নিত করার মাধ্যমে সেই বিষয়ে বিস্তর আলোচনা করতেই আজকের এই লেখাটি। শেষ পর্যন্ত গিয়েই বোঝা যাবে অবধারিত ভাবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে প্রতি বিপ্লব যে ঘটতে যাচ্ছে তার লক্ষণ।

নোবেল পাওয়ায় বিশ্ব পরিমণ্ডলে পরিচিত, প্রখ্যাত ও সম্মানিত ব্যক্তি ড. ইউনুস এর আগেও বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আলোচনায় এসেছিলেন “বিশেষ করে” এক এগারোর সরকারের সময় এবং তার বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার করা কতগুলো মামলার কারণে সে সময়। প্রথম ঘটনার ক্ষেত্রে সেই সময়টিতে তিনি নিজের ইচ্ছায় কিংবা পশ্চিমা বিশ্বের ইচ্ছায় রাজনৈতিক দল গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। গঠন করেছিলেন রাজনৈতিক দলও। যার নাম ছিল “নাগরিক শক্তি”। সেটা যে তার দ্বারা হতো না সেটা তিনি তখন স্বীকার করেছিলেন এবং তার দলের বিলুপ্তিও ঘটিয়েছিলেন। নোবেল পুরষ্কার লাভ করার মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যেই রাজনৈতিক দল গঠন করা কার্যক্রম শুরু করে সবাইকে তখন অবাক করে দিয়েছিলেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

কেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হলো ডক্টর ইউনুস কে?
———————————————————–

তখনকার এক এগারোর সরকারে তাকে সরকার প্রধান করার কথাও আলোচনায় উঠে এসেছিল এবং তিনি পরবর্তীতে কিছু মন্তব্যের কারণে সেখান থেকে সরেও গিয়েছিলেন। গবেষক-লেখক মহিউদ্দীন আহমেদ একটি লেখায় দুজন সেনা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে লিখেছেন, মুহাম্মদ ইউনূস কেয়ারটেকার সরকার প্রধান হওয়ার প্রস্তাবে রাজী না হওয়ার প্রধান কারণ ছিল এই সরকারের স্বল্প মেয়াদ।

দীর্ঘ দেড় যুগ পরে কিন্তু তার সেই ইচ্ছাও বাংলাদেশের ছাত্র জনতা পূরণ করেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তিনি কি আসলে সরকার প্রধান হওয়ার যোগ্য? না হলেই বা হলেন কিভাবে? বাংলাদেশে রাজনৈতিক জ্ঞান সম্পন্ন মোটামুটি দল নিরপেক্ষ কোন মানুষ কি ছিলেন না? হাজারো ছাত্র জনতার রক্তে ভেজা গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে কাউকেই কি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান আসনে বসানো সম্ভব ছিল না? হয়তোবা ছিল কিন্তু দেশের এই ক্রান্তিকালে ড. ইউনূস এর মত এমন একজন ব্যক্তির প্রয়োজন ছিল যিনি কিনা বিশ্ব পরিমণ্ডলে পরিচিত মুখ এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। যার কল্যাণে পতিত স্বৈরাচারী, দুর্নীতিগ্রস্থ , লুটপাটকারী সরকারের কারনে ফোকলা হওয়া দেশের অর্থনীতির করুন দুর্দশা গ্রস্থ সময়ে তার সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে অর্থনীতির চাকাকে সচল করতে পারবেন – এমন প্রত্যাশা থেকে হয়তো বা তাকে বাংলাদেশের গণ অভ্যুত্থানকারী ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে মনোনীত করা হয়েছিল। এতে কোন বৃহৎ পরাশক্তির হাত আছে কিনা সে কথা আলোচনায় নাই বা আনলাম কারণ সে বিষয়টি এ আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়।

হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে গড়া অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার প্রতিদান কি দিতে পারবেন ড. ইউনূস ?
—————————————————————–

প্রশ্ন হচ্ছে তিনি অর্থনীতির চাকাকে সচল করতে পারলেও হাজারো শহীদের রক্তের উপর দিয়ে সফল হওয়া গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত মুক্তি কামী ১৮ কোটি ছাত্র জনতার আকাঙ্ক্ষা কি পূরণ করতে পারবেন? এমন প্রশ্ন আসা অবান্তর নয়। কারণ শুরু থেকে তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে ভুল সেসব থেকে ক্রমাগত পতিত স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, দুর্নীতিগ্রস্থ, গণহত্যাকারী সরকারকে পুনরায় পুনর্বাসিত করার কাজে সহায়তা করছে। যে কারণে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার যে আকাঙ্ক্ষা ১৮ কোটি মানুষের ভিতর ছিল সে কারণে তারা অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছেন সেটি আজ বেহাত হবার পথে। তেমনটি না হোক এমন প্রত্যাশা থেকে আশঙ্কার কথা বলতে হচ্ছে – গণতন্ত্রের চর্চা করার অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার, দুর্নীতি বিরোধী অবস্থান, মানুষের ভোট প্রদানের অধিকার ফেরত এবং সর্বোপরি জনকল্যাণের জন্য নিবেদিত হওয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই সুযোগ দানের কারণে বিগত সরকারের লোকজনও কিন্তু ঘুরে দাড়াচ্ছে। একটা বিপ্লবের পর তাদের প্রথম ভুল ছিল ফ্যাসিস্ট সরকারের কাটা ছেঁড়া করে বিকৃত করা সেই সংবিধান ও ওই সংবিধানের আলোকে সবকিছুকে মেনে নিয়ে সে অনুযায়ী নির্বাচনকালীন বা অন্তর্বর্তীকালীন একটা সরকার গঠন করা। তাদের দ্বিতীয় ভুল হচ্ছে, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা সম্পন্ন কোন ব্যক্তিকে না রাখা। যে কারণে তারা কতগুলো সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কূট চালাকী ধরতে না পারার কারণে এবং রাজনৈতিক বিচক্ষণতা না থাকার কারণে প্রতি পদে পদে আওয়ামী লীগের “প্রতি বিপ্লবে”র সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন। যদি পতিত স্বৈরাচারদের ফ্যাসিস্ট দলটি এই “প্রতি বিপ্লব” করতে পারে তবে তা ঠেকানো ড. ইউনুসের অরাজনৈতিক সরকারের পক্ষে কতটা সম্ভব তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। তারা হয়তো সাময়িক আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন যে , তারা কিছু নির্ধারিত ব্যক্তিকে আপাত দৃষ্টিতে জনসমক্ষে বিচারের আওতায় আনছেন এবং সেই সাথে প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাহ্যিকভাবে কিছু রদবদল করছেন কিন্তু তারা কি জানেন যে, সাবেক এই ফ্যাসিস্ট দলটি নিচ থেকে কততম শীর্ষ পর্যন্ত তাদের অনুসারী আমলা বানিয়ে রেখে গেছেন?নেতাকর্মী ছাড়াও? অন্য একটি নির্বাচিত সরকার এলে হয়তো বা ফ্যাসিস্ট, দুর্নীতিগ্রস্ত, লুটপাট ও গণহত্যাকারী সরকারের রেখে যাওয়া আমলা দেরকে চিনে চিনে বাধ্যতামূলক অবসর কিংবা ওএসডি করতো। কিন্তু ড. ইউনুস সরকারের অন্তবর্তী কালীন সরকার কি এমন কোন ওএসডি কিংবা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছেন ৫ শত কিংবা ১ হাজার কিংবা ২ হাজার জনকে? তারা কি সেটা করছেন? তারা ওইসব স্বৈরাচারের দোসর এবং সহযোগিতা কারী আমলা দেরকে এক স্থান থেকে শুধুমাত্র অন্য স্থানে পদায়ন করছেন। এর মাধ্যমে কি তারা ঘর পরিষ্কার করতে পেরেছেন, তারা কি পারবেন সেই ঘরে নির্ভেজাল, দুর্নীতিমুক্ত, “প্রতি বিপ্লব” ঠেকিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সরকার নির্বাচনের একটি প্লাটফর্ম তৈরি করতে? এইসব স্বৈরাচারের দোসর দেরকে সাথে রেখে সে পর্যন্ত তারা কি যেতে পারবেন – এমন প্রশ্ন আসা বাস্তবিক পরিস্থিতি অনুযায়ী অমূলক কি?

প্রতি বিপ্লবের লক্ষণ যেখানে ইতিমধ্যেই ভেসে উঠছে!
————————————————————

দেশ গোল্লায় যাক, তাতে কার বাপের কি? ১৬ বছরে বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি একটি ফ্যাসিষ্ট, স্বৈরাচারের একটি চুলও বাঁকা করতে পারেনি। জামায়াত হারিয়েছিল তাদের নিবন্ধন। বিশ্ব পরাশক্তি গুলোর দ্বন্দ্বে ২০২৪ সালেও প্রভাব ও প্রতিপত্তি নিয়ে একদলীয় নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসীন হয় আওয়ামীলীগ। বিশ্ব মোড়লরা তাকিয়ে থেকে স্বাগত জানানো ছাড়া আর কিছুই করেনি। কোটাবিরোধী আন্দোলন ছিল মূলত একটা সরকারেরই পূর্বের মত করা গতানুগতিক নাটকের একটা অংশ বিশেষ। কিন্তু ওই যে একটা কথা আছে না? “পরের জন্য যে গর্ত করে সে করতে সে গর্তে সে নিজেই পড়ে”। শেখ হাসিনা তেমন একটি গর্ত খুঁড়ে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে করা চুক্তি গোপন করতে ও কিছু সুবিধা দিতে পূর্বের মতো ১৮ কোটি জনতার চোখ বা দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে রাখতেই ওই সময় কোটা আন্দোলনকে প্রথম পর্যায়ে সমর্থন দিয়েছিল কিন্তু তিনি জানতেন না এই কোটা আন্দোলনের নেতৃত্ব একসময় তার নিয়ন্ত্রণ বলয় থেকে বাইরে বেরিয়ে অন্য কারো হাতে চলে যাবে এবং তার পতন ঘটাবে। শেখ হাসিনা ও তার দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ছাত্র আন্দোলন সম্পর্কিত ধারণা এমনটি ছিল- “হাতি ঘোড়া গেল তল ভেড়া বলে কত জল”। হেফাজতের গণহত্যা, পিলখানায় সেনাবাহিনীর অফিসার দের গণহত্যা, মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত-বিএনপি’র শীর্ষ শক্তিশালী নেতৃবৃন্দ কে হত্যা, একের পর এক পর পর তিনটি অবৈধ নির্বাচন বিরোধীদল দমন মত প্রকাশে বাধা, সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপে গুম, খুন, জঙ্গি নাটক দিয়ে মানুষ হত্যা সবকিছু করে যখন ক্ষমতায় তখন হাঁটুর বয়সী বুদ্ধিসম্পন্ন এই ছাত্ররা কি-ই বা করতে পারবে? কিন্তু সেটিই হল– নেতৃত্ব চলে গেল তার দীর্ঘ স্বৈরশাসনের মাধ্যমে নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের পক্ষের শক্তির কাছে। এমন পর্যায়ে তা দমাতে গিয়ে তারা একের পর এক ক্রমাগত ভুলের পর ভুল করে ক্ষমতা হারিয়ে ফেলল।

বিএনপির হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো, কিন্তু সেখানেও মীরজাফর, ঘষেটি বেগমরা থেকেই গেল। তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ল কখন নির্বাচন হবে, কখন সমাবেশ দেয়া যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। যেই ভাবা সেই কাজ, ভাবতে ভাবতে সমাবেশ একদিন পরে দিয়েই দিল। জনগণের সমালোচনার মুখেও পড়ল। তাতে কি ন্যাংটার কি আছে বাটপারের ভয়? এমন কথাও আসতে থাকল যে পালাবদল না হতেই শুরু হয়েছে বিভিন্ন দখল বাজদের চিন্তাভাবনা। তা থামাতে হাই কমান্ড কঠোর হলো, এমন কঠোর হলো যে তারা নিজ এলাকাতেই এখন পূর্বের ফ্যাসিস্ট শাসনের মতোই ভেজা বেড়াল হয়ে লুকিয়ে না থাকলেও তার মতই থাকছে। সেই স্থবিরতার সুবিধা নিয়ে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন রূপে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। কোন কিছুরই পরিবর্তন হয়নি। ইউনুস সরকারকে চাপে ফেলতে পানি দিয়ে দেশ ভাসিয়ে দেয়া তাদের জন্য একটি সুফল বয়ে নিয়ে এসেছে । এই ফাঁকে সরকারের অন্য দিকগুলোতে নজর দেওয়ার মতন কোন সুযোগ নেই বা ছিল না। অন্যদিকে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় তারা হতাশাগ্রস্ত ছিল ফলে ছাত্র আন্দোলনের পর তাদের সেই হতাশা কাটিয়ে আশার আলো জাগায় তারা এখন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল এবং স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে গিয়ে মাঠের রাজনীতিও হারিয়ে ফেলল সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ঢুকে নেতৃত্ব প্রদান করতে থাকলো এবং এখনো তাই চলছে। ডক্টর ইউনুস এর অন্তর্বর্তীকালীন রাজনৈতিক মেধা ও প্রজ্ঞাবিহীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা বিচার বিভাগের ক্যু থামানো, আনসার বিদ্রোহ দমন কিংবা রিক্সা বিদ্রোহ দমন করে আত্মতৃপ্তিতে ভুগতে থাকলো। না পরিবর্তন হলো ডি জি এফ আই, এনএসআই সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কার্যক্রম, না হলো পরিবর্তন তাদের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম। ফলে এর সুফল ধীরে ধীরে চলেই যাচ্ছে প্রতি বিপ্লব করা আওয়ামী লীগে। এই মাঠ পর্যায়ের একটি ঘটনার উদাহরণ দিয়েই লেখাটির ইতি টানতে হচ্ছে —এমন ঘটনা হয়তো চোখ কান খোলা রাখলে প্রত্যেকেই তার নিজ নিজ এলাকায়ও দেখতে পারবেন।

মূলত এমন সারাদেশে হাজারো ঘটনা থাকলেও এই একটি ঘটনা উদাহরণ হিসেবে দিয়ে লেখাটি শেষ করছি–যা উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দরের। যেখানে দীর্ঘ দেড় দশকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার প্রভাব প্রতিপত্তি বলয় এমনভাবেই সাজিয়েছে যে, সেখানে বিএনপি কিংবা জামায়াত এখনো তাদের বিরুদ্ধে চোখ তুলে কথা বলার মত সাহস পায়নি কিংবা টু শব্দ করার সাহস পাচ্ছে না। তার অর্থ কি? প্রতি বিপ্লবের জায়গা এভাবে প্রতিটি অঞ্চলে তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ ফিরে আসা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়, এই উপজেলার অন্তর্গত সোনাহাট স্থল বন্দরের একটি ভয়ংকর দুর্নীতির রিপোর্ট কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে বেশকিছু গণমাধ্যমকর্মী একের পর এক প্রকাশ করেন গত ২৬, ২৭, ২৮ আগস্ট। যা এমন শিরোনাম দিয়ে গুগলে সার্চ করলে পাওয়া যায় –, রাজস্ব ফাঁকির স্বর্গদুয়ার কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর, সোনাহাট স্থলবন্দরে হাজার কোটি টাকার রাজস্ব লোপাট, মূল হোতারাও বহাল তবিয়তে, সোনাহাট স্থলবন্দরে এখনও চলছে হাজার কোটি টাকার রাজস্ব লোপাটঃমুল হোতারা বহাল তবিয়তে, শতকোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির স্বর্গরাজ্য সোনাহাট স্থলবন্দর -হোতারা বহাল তবিয়তে! , সোনাহাট স্থলবন্দর: হাজার কোটির রাজস্ব ফাঁকি ও দূর্নীতির অভয়ারণ্য ? মূল হোতারা এখনও বহাল তবিয়তে! এমন বিভিন্ন শিরোনামে সার্চ করলেই চলে আসে সেই সংবাদগুলো। অথচ সারা দেশের সকল মন্ত্রণালয় কিংবা সেই অধীনস্থ অফিসে প্রবেশাধিকার থাকলেও স্থলবন্দরগুলোতে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ওইভাবে একেবারেই নেই, কোন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া। অথচ ওই বন্দরের ভয়ংকর দুর্নীতি ও রাজস্ব ফাঁকির সংবাদ প্রকাশের পর থেকে এ পর্যন্ত কোন গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতা দৃশ্যমান হয়নি, গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে নেয়া হয়নি নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন এই স্থল বন্দরের কোন তথ্য উপাত্ত। আর এই ড. ইউনুস এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত দুদক নামের কাগুজে বাঘ কিংবা তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কর্তৃক নেয়া হয়নি এসব খবরের কোন সত্যতা! অন্তর্বর্তী সরকারের এই বেখেয়ালিপনা ও এখনও আওয়ামীলীগের ভয়ে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে থাকা বিএনপি ও জামায়াতের রাজনৈতিক তৎপরতা হীনতার কারণেও সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওই স্থলবন্দর সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট তাদেরকে সহায়তা করতে মাঠে নেমেছে দুর্নীতিগ্রস্থ, দুর্নীতি ও অন্যায়কে সহায়তাকারী অতীতের সরকারের সেই সব লোকজন যারা স্থানীয়দের ভাষ্যমতে আওয়ামী লীগেরই বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী এবং ওই দুর্নীতিবাজদের সহায়তাকারী। অথচ সেখানে প্রশাসন দিনের পর দিন নির্বিকার। কতটা দোর্দণ্ড প্রভাব থাকলে এইসব অন্যায়কারী লোকজনের পক্ষে সেই অতীত সরকারের লোকজন মাঠে নামে! তা দেখলেই ড. ইউনুস এর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতার পরিধি কতটুকু সংকীর্ণ তা অনুমান করা যায় এবং সেই সাথে প্রতি বিপ্লব ঠেকানো তার পক্ষে যে একপ্রকার অসম্ভব তা বুঝতে কারো বাকি থাকার কথা নয়। সে কারণেই এই সত্যটা অকপটে স্বীকার করতেই হয় যে, “নোবেল পুরস্কার লাভ” করা আর “রাষ্ট্র শাসন করা” এক জিনিস নয় তা শুধুমাত্র জটিল এবং কঠিন রাজনৈতিক প্রজ্ঞা সম্পন্ন রাজনীতিবিদদের জন্যই প্রযোজ্য যারা সব মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সারাদেশের প্রত্যেকটি ঘটনার দিকে তাকাতে চোখ কান খোলা রাখতে পারেন। সুতরাং এমন ঘটনা থেকে এটা স্পষ্ট যে ড. ইউনুসের পক্ষে আওয়ামী লীগের প্রতি বিপ্লব ঠেকানো হয়তো অতটা সহজ হবে না যদি এখনই সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী কাজ করতে না পারেন। ফলে ফিরে আসবে পতিত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট এবং পদদলিত হবে ১৮ কোটি ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিলিয়ে দেয়া হাজার হাজার তাজা প্রাণের রক্ত এবং তার বিনিময়ে অর্জিত জেনারেশন জেড এর দ্বিতীয় স্বাধীনতা। আর তেমনটি হলে বিলীন হবে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার কারণে নোবেল বিজয়ীর নোবেলের সম্মান ও মর্যাদা – এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

 

 

 

 

সব খবর