সাতর্কতা, ৬ অক্টোবর: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ঘোষণা করেছেন যে, তিন মাস পর ছয়টি সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই বক্তব্য প্রকাশ করেন মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, “তিন মাসের পর ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে। প্রশাসনে যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা জন-আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের দিকে নিবদ্ধ থাকবো।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, “সংস্কার কমিশনগুলো আগামী তিন মাসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিবে। এই প্রতিবেদনগুলো নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক দল এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করবে। এরপর রিফর্মের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ন্যূনতম ঐকমত্যে পৌঁছাবে, যা নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণে মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। রিফর্মের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনী রোডম্যাপ সংক্রান্ত আলোচনাগুলো ইতিমধ্যেই অগ্রসর। ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে, যার মধ্যে পাঁচটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে এবং বাকিগুলো আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে ঘোষণার অপেক্ষায় আছে।”
প্রেস সচিব আরও জানান, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন যে, নির্বাচনী কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে যাবে। নির্বাচন প্রস্তুতি এবং নির্বাচন কমিশন গঠনের কাজগুলো ত্বরান্বিত করা হবে। রিফর্ম নিয়ে ঐকমত্য তৈরি হলে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে।”
এদিকে, সংলাপে শেখ হাসিনাসহ গণহত্যায় জড়িতদের বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ গণহত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও গুম কমিশনেও অভিযোগ জমা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কাজ চলছে।”
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, “সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর চেষ্টা করছে। ধীরে ধীরে বাজারে স্বস্তি ফিরে আসবে। সরকার এই বিষয়ে খুবই আন্তরিকভাবে কাজ করছে।”
এই ঘোষণা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি দ্রুত এগিয়ে নিতে এবং রাষ্ট্র সংস্কারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তদুপরি, প্রশাসনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি জনমতকে গুরুত্ব দিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লক্ষ্যে কাজ করবে।