সাতর্কতা, ৬ অক্টোবর: বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এর প্রতিনিধি দল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির পক্ষ থেকে গুরুত্বপূর্ণ দাবিসমূহ সামনে তুলে ধরেছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত সংলাপ শেষে দলটির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, “আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচনী রোড ম্যাপ চেয়েছি। এছাড়াও এনআইডি কার্ড স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়া বিষয়ে আইন বাতিল করার এবং সকল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বাতিল করার দাবি আমরা উপস্থাপন করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “সব ভুয়া নির্বাচনে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনের আওতায় আনার দাবিও প্রধান উপদেষ্টার সামনে তুলে ধরা হয়েছে।”
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, “আগামী ৮ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের দুই মাস পূর্ণ হবে। গত সরকারের আমলে যারা আমাদের দোসর হিসেবে লুটপাট, অনাচার, অত্যাচার এবং গুম খুনে যুক্ত ছিলেন, তাদের বেশিরভাগই এখনও নিজেদের পদে বহাল রয়েছেন। আমরা অনুরোধ করেছি যে, তাদেরকে তৎকালীনভাবে সরিয়ে নিরপেক্ষ কাউকে নিয়োগ দেওয়া হোক। এছাড়াও, ৫৯ জেলা প্রশাসকের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্পষ্টতা আনা এবং অভিযোগযুক্তদের পদমুক্ত করার দাবি করেছি।”
তিনি বলেন, “বিচার বিভাগের বিষয়ে আমরা স্পষ্ট করে বলেছি যে, হাইকোর্ট বিভাগে দলীয় ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ৩০ জন বিচারক এখনও বহাল রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছি এবং দলকানা বিচারকদের অপসারণের দাবি করেছি।”
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টাকে আমরা জানিয়েছি যে, দুর্নীতি ও হত্যার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা ব্যক্তিদেরকে জামিন দেওয়া না হোক এবং সব গায়েবি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হোক।”
তিনি যুক্ত করেন, “কিছু সাবেক মন্ত্রী-এমপি দেশত্যাগ করছেন এবং কিভাবে তারা দেশ থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন তা খতিয়ে দেখার দাবি করেছি। শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন, তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে আলোচনার তাগিদও প্রদান করেছি।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যেও কিছু সদস্য রয়েছেন যারা গণঅভ্যুত্থান বিপ্লবের মূল স্পিরিটকে ব্যাহত করছেন, তাদেরকে সরিয়ে আনার দাবি করেছি।”
বিএনপির মহাসচিব উল্লেখ করেন, “প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।”
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান এবং সালাহউদ্দিন আহমেদ।