বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি) জানিয়েছে, গত পাঁচ দিনে দুটি অয়েল ট্যাংকারে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলার অপচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। উভয় ঘটনায় পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) এর ক্রুড অয়েল লাইটারিং (খালাস) করা ট্যাংকারগুলো ব্যবহৃত হয়েছিল।
শনি (৫ অক্টোবর) সকাল বেলা চট্টগ্রাম নগরীর বিএসসির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক এই দাবি জানান।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বঙ্গোপসাগরের চার্লি এঙ্করেজ এলাকায় বিএসসির ট্যাংকার জাহাজ ‘বাংলার সৌরভে’ এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যার ফলে একজন ব্যক্তি প্রাণ হারান।
এর আগেও, মাত্র পাঁচ দিন আগে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১১টায় পতেঙ্গা ইস্টার্ন রিফাইনারির ৭ নম্বর ডলফিন জেটিতে বিএসসির মালিকানাধীন ‘বাংলার জ্যোতি’ ট্যাংকার জাহাজে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যার ফলে তিনজন নিহত হন।
সংবাদ সম্মেলনে কমডোর মাহমুদুল মালেক বলেন, রাত সাড়ে ১২টায় ‘বাংলার সৌরভে’ জাহাজে আগুন লাগার সময় জাহাজে কোন কাজ চলছিল না। চারটি পয়েন্টে আগুন দেখা যায় এবং অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বন্দরের সাতটি ট্যাগ একযোগে মিলে তৎপর হন। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর আগুন আবার ধরে যায়। আগুন লাগার সময় জাহাজের পাশ দিয়ে একটি স্পিডবোট চলার দেখা যায়।
মালেক বলেন, গ্যাস ফর্ম বা অন্য কোনো কারণে আগুন লাগার সম্ভাবনা কম হওয়ায়, এটি নাশকতা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে দুটি ট্যাংকারে আগুন লাগানোর ঘটনা জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলার স্পষ্ট চিহ্ন। তবে, সবকিছু তদন্তের পরই সঠিক কারণ জানা যাবে। এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।
বিএসসির টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে প্রধান করে আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ‘বাংলার সৌরভে’ জাহাজে ১১,৫৫০ টন অপরিশোধিত তেল ছিল। জাহাজে ৪৮ জন ক্রু এবং ওয়াচম্যান ছিলেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, বিএসসির স্টুয়ার্ট সাদেক মিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি প্রাণহানি যান।