কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় অবস্থিত যমুনা অয়েল কোম্পানি লিঃ ও মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিঃ এর দুইটি ভাসমান তেল ডিপো প্রায় পাঁচ বছর ধরে তেল শূন্য অবস্থায় রয়েছে। এই অবস্থা স্থানীয় শ্রমিক-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে, যারা ডিপোতে কর্মরত।
প্রতিনিধি গোলাম মাহবুব জানান, ডিপো দুটি ২০২০ সালের শুরু থেকেই তেল সরবরাহ বন্ধ থাকার ফলে কর্মীদের জীবনযাত্রায় কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে কর্মরত ১৭ জন কর্মচারীসহ প্রায় ৩০ জন শ্রমিক তাদের পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে ডিপোতে।
১৯৮৯ সালে স্থাপিত এই ভাসমান তেল ডিপো গুলো ব্রহ্মপুত্র নদে স্থিত এবং কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় জ্বালানী তেল সরবরাহ করতো। সরকারী দামে তেল ক্রয় করে খুচরা বিক্রেতাদের নিকট সরবরাহ করলেও, গত পাঁচ বছরে অজানা কারণে তেল সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় স্থানীয় বাজারে তেলের দাম বেড়েছে।
ডিপো দু’টি বন্ধ থাকার ফলে পার্বতীপুর ও রংপুর ডিপো থেকে তেল আনার জন্য অতিরিক্ত খরচে প্রতিলিটার প্রায় ২ টাকা বাড়ছে, যার ফলে খুচরা বিক্রেতারা তেল ১০৬-১১০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কৃষক, মৎসজীবী ও অন্যান্য ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জ্বালানী তেলের অভাবে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কৃষকরা উল্লেখ করেছেন, ডিপো থেকে সরাসরি তেল না পেয়ে তাদের অতিরিক্ত খরচ বাড়ছে। ডিলাররা পার্বতীপুর ও রংপুর থেকে তেল নিয়ে আনতে হয়, যা বিক্রয়ের খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে স্থানীয় বাজারে প্রতিদিন ৪-৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত লেনদেন হচ্ছে।
মেঘনা অয়েল কোম্পানির ডিপো ইনচার্জ মো. শরিফুল ইসলাম জানান, ভাসমান ডিপো স্থায়ী করার প্রক্রিয়া চলছে এবং বিপিসির একটি টিম ইতোমধ্যে ডিপো পরিদর্শন করেছে। তবে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানাতে তিনি ব্যস্ত থাকার কারণে মন্তব্য করতে পারেননি। যমুনা অয়েল কোম্পানীর এজিএম জাহিদ মুরাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মাইদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডিপো দুটি অবহেলায় থাকার কারণে আসন্ন সেচ মৌসুমের আগে তেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, স্থানীয় জনগণ ও ব্যবসায়ী মিলিতভাবে কর্তৃপক্ষকে ডিপো পুনরায় চালু করার এবং তেলের সরবরাহ অব্যাহত রাখার জন্য তৎপর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন, যাতে স্থানীয় অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকে এবং মানুষের জীবনযাত্রা নির্বিঘ্নে চলতে পারে।