৫ অক্টোবর: ছাতক উপজেলা ও উত্তর খুরমা ইউনিয়নের জনতার পৃথক ব্যানারে বিল্লাল আহমদের ফাঁসির দাবিতে সুনামগঞ্জের জালালপুর এলাকায় শনিবার বিকেলে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের এই এলাকায় আন্দোলন চলাকালীন বক্তব্য রাখেন ছাতক উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল, মৈশাপুর গ্রামের মরহুম ফারুকের ছোট ভাই আকিক মিয়া, প্রবাসী কবির মিয়া এবং অন্যান্য আন্দোলনকর্মীরা।
আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন যে, ২০১৮ সালের ২২ জুন মৈশাপুর গ্রামের সমাজসেবী ফারুক মিয়াকে ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদের নেতৃত্বে খুন করা হয়েছে। ফারুকের লাশ গ্রামের পাশে পাতলাছুরা বিলে গুম করে রাখা হয়। পরদিন পুলিশ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে, কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে বিল্লাল আহমদকে প্রধান আসামী করে ছাতক থানায় মামলা দায়ের করার চেষ্টা করলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে, ফারুকের স্ত্রী রেহেনা বেগম মামলাটিকে আদালতে নিয়ে আসেন এবং মামলাটি সিলেট পিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হয়। রহস্যজনকভাবে মামলার প্রধান আসামীর নাম উল্লেখ না করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর, বাদি আদালতে নারাজি জানিয়ে মামলাটি সিআইডি-র কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলাটি সিআইডি তদন্তাধীন রয়েছে।
আন্দোলন চলাকালীন, শামছুল ইসলাম খান, আছদ্দর আলী, আবদুর রহমান, আপ্তাব আলী, ছায়াদ মেম্বার, ফারুক আহমদ, কবির মিয়া, আকবর আলী, আবদুর রহিম, সাহেদ মিয়া, আবদুল করিম, জমির আলী, সমর আলী, ময়না মিয়া, আলা উদ্দিন, ফজলুর রহমান, উমরিত মিয়া, কাজল মিয়া, গৌছ উদ্দিন, ছায়েম মিয়া, রাজা মিয়া, মামুন মিয়া, সাকিন মিয়া এবং নাহিদ মিয়া প্রমুখও উপস্থিত ছিলেন এবং সরকারের অনিয়ম-দূর্নীতিসহ অস্ত্র উদ্ধারে প্রশাসনের প্রতি জোর দিয়ে দাবি জানান।
**আন্দোলনের মূল দাবি:**
1. **ফাঁসির দাবি:** ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদের অবিলম্বে মুক্তি।
2. **অস্ত্র উদ্ধারের দাবি:** সরকারের অনিয়ম-দূর্নীতিসহ অস্ত্র উদ্ধারে প্রশাসনের প্রতি চাপ।
3. **সামাজিক ন্যায়:** মৈশাপুর গ্রামের ফারুক মিয়ার হত্যাকাণ্ডের সুবিচার নিশ্চিত করা।
4. **প্রশাসনিক সংস্কার:** প্রশাসনের দুর্নীতি ও অনিয়ম নির্মূল করা।
**আন্দোলনের পটভূমি:**
২০১৮ সালের ২২ জুন ছাতক উপজেলার মৈশাপুর গ্রামে ফারুক মিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সংঘটিত হয়, যেখানে ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদকে প্রধান আসামী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, পুলিশ এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষ মামলাটি যথাযথভাবে তদন্ত করেনি, যার ফলে ন্যায়বিচারের আশায় প্রতিবাদকারীরা মানববন্ধনে সংগঠিত হয়েছেন।
**সামাজিক প্রতিক্রিয়া:**
আন্দোলনের সময় উপস্থিত বিভিন্ন ব্যক্তি ও দল বিভিন্ন সভা-সমাবেশে সরকারের অনিয়ম-দূর্নীতি ও দুর্নীতি মোকাবেলায় চাপ তৈরি করতে সচেষ্ট হয়েছেন। আন্দোলনকারীরা আশা করছেন, সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে ফারুক মিয়ার মামলাটির সুবিচার নিশ্চিত করা হবে এবং বিল্লাল আহমদকে মুক্তি প্রদান করা হবে।
**ভবিষ্যতের পরিকল্পনা:**
আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীরা আগামী দিনগুলোতে আরও বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রতিবাদ আয়োজনের পরিকল্পনা করেছেন, যাতে সরকারের প্রতি চাপ বৃদ্ধি পায় এবং ন্যায়বিচারের দাবি পূরণ হয়। তারা আহ্বান জানিয়েছেন, সকল প্রতিবাদকারীদের শান্তিপূর্ণ ও সংহতভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে।
**সমাপ্তি মন্তব্য:**
ছাতক ও উত্তর খুরমা ইউনিয়নের জনগণ আশা করছেন, সরকারের অনিয়ম-দূর্নীতি মোকাবেলায় যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং মৈশাপুর গ্রামের ফারুক মিয়ার হত্যাকাণ্ডের মামলাটি দ্রুত সমাধান হবে। তাদের বিশ্বাস, জনশক্তির সমর্থনে সরকার বাধ্য হয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।