ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দ্রুত সমালোচনা করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায়, বুধবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটস ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ বা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
এর একদিন পর বৃহস্পতিবার, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী এবং দশটি অস্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র গুতেরেসের পাশে থাকার কথা জানিয়েছে। যদিও সরাসরি ইসরায়েলের নাম উল্লেখ করা হয়নি, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো জাতিসংঘের মহাসচিব এবং জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে কার্যকর সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে। তারা সকল সদস্য রাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছেন যে, মহাসচিবের কাজ ও অফিসকে ক্ষুণ্ণ করে এমন কোনো কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
গতবছরের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলা করার পর থেকে ইসরায়েল ও জাতিসংঘের মধ্যে সম্পর্ক মাঝে মাঝে তিক্ত হয়ে উঠেছে। বুধবার গুতেরেসকে পারসোনা নন গ্রাটা ঘোষণা করার সময়, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাটস তাকে সন্ত্রাসী, ধর্ষক ও হত্যাকারীদের সমর্থনকারী ইসরায়েল-বিরোধী মহাসচিব হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
কাটস এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “যারা দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলের উপর ইরানের জঘন্য হামলার নিন্দা করতে পারে না, তারা ইসরায়েলের মাটিতে পা রাখার যোগ্য নন।” তিনি আরও বলেন, এই ধরনের অবস্থায় ইসরায়েল মহাসচিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।
একই দিনে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে গুতেরেস জানিয়েছেন, “আমি আবারও ইসরায়েলের উপর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা করছি।” তিনি যোগ করেছেন, এই ধরনের হামলার ফলে মানবতার প্রতি শাপ দেওয়া উচিত এবং সকল পক্ষকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উৎসাহিত করা প্রয়োজন।
এই ঘটনার ফলে ইসরায়েল ও জাতিসংঘের মধ্যে সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে উঠতে দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ জাতিসংঘের মহাসচিবের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন বজায় রাখতে সহায়ক হচ্ছে না, বরং দ্বন্দ্বকে আরও গভীর করছে। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো এই ঘটনায় জাতিসংঘের গুরুত্ব এবং কার্যকারিতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় কোনো বাধা না আসে।
**মূল বিষয়সমূহ:**
– ইসরায়েল কাটস জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন।
– জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো গুতেরেসের পাশে থাকার কথা জানিয়েছে।
– ইসরায়েল ও জাতিসংঘের মধ্যে সম্পর্ক গত বছর থেকে তিক্ত।
– গুতেরেস ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, যেখানে ইসরায়েল ও জাতিসংঘের মধ্যে সম্পর্কের পুনর্গঠন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় নতুন চ্যালেঞ্জ উত্থিত হয়েছে।