বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ গত শনিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া কনভেনশন হলের ঈগল হলে একটি সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যমান সংবিধান বাতিলের দাবি তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অনতিবিলম্বে অপসারণের পাশাপাশি বিদ্যমান সংবিধান দ্রুততম সময়ে বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, বর্তমান সংবিধানটি একটি ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থার জন্ম দিয়েছে। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, বিডিআর বিদ্রোহ সহ সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া অপশাসনগুলোর বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব নয় যদি সংবিধান অব্যাহত থাকে। তাই, তিনি দাবি করেছেন যে, সংবিধান বাতিল করে নতুন করে সংবিধান পুনর্গঠন করা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান মেনে চলেনি এবং বিপ্লবী সরকারের দাবী সত্ত্বেও তারা কোনো নিয়ম-কানুন মেনে চলে না। ফ্যাসিবাদী এই ব্যবস্থাকে বিলোপ করার জন্য সংবিধানের ওপর নির্ভর করা হলে সরকার পুরো জাতিকে হতাশ করবে।
হাসনাত আবদুল্লাহ যুক্ত করেছেন, তিনি আশা করেছিলেন যে, নতুন সরকারের প্রথম দুই মাসে জনগণ অনুভব করবে যে সরকার বিপ্লবী। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তিনি উল্লেখ করেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একটি সংবাদ সম্মেলনে সরকারের বিভিন্ন অন্যায়ের সমালোচনা করা হয় এবং এই সময়ে ছাত্র আন্দোলন আত্মগোপনে থাকলেও, অনলাইনে সবাইকে একত্রিত করার চেষ্টা চালানো হয়।
হাসনাত আবদুল্লাহ ডিজিএফআই (দেশের প্রধান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা) এর সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ডিজিএফআই-এর ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার কারণে পুলিশ তাদের পোশাক পরিবর্তনের দাবি করেছে। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, ডিজিএফআই-এরও সংস্কার প্রয়োজন এবং তাদের অতীতের অপরাধের দায় তাদেরই নিতে হবে।
হাসনাত আবদুল্লাহ আওয়ামী লীগের প্রসঙ্গে বলেন, যতদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মাফ না চায়, বিচার নিশ্চিত না করে এবং জনতা সিদ্ধান্ত না নেয়, ততদিন পর্যন্ত ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগের পাবলিক একসেসকে ফিরিয়ে দিবে না। তিনি আরও বলেছেন, আওয়ামী সরকারের আমলে যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের তহবিল হিসেবে কাজ করেছিলেন। তিনি দাবি করেছেন যে, গত তিনটি সংসদকে অবৈধ ঘোষণা করা প্রয়োজন এবং তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দায়ের করা উচিত। এছাড়াও, সংসদ সদস্যদের সদস্যপদ অবৈধ করার পাশাপাশি তাদের সুবিধাসমূহ ফেরত দিতে হবে।
এই ধরনের দাবির মাধ্যমে হাসনাত আবদুল্লাহ বিদ্যমান রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা তুলে ধরছেন এবং একটি নতুন সাংবিধানিক কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করছেন।