বরিশাল সদর উপজেলার ৭ নং চরকাউয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছেন কাজী মোকলেছুর রহমান। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শোকজ পাওয়া মোকলেছুরের জবাব সন্তোষজনক না হলে বিএনপি তদন্তে নামতে পারে। উপজেলা বিএনপি থেকে সাংগঠনিকভাবে তদন্ত কমিটি গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।
শোকজ নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, বরিশাল সদর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট কাজী মোকলেছুর রহমান কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশ উপেক্ষা করে গত ৩০ আগস্ট নয়ানী চৌধুরী মাঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও চরকাউয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মুন্সিকে বিশেষ অতিথি করে নিজেকে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে প্রচার করেন এবং প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এর ফলে ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও বিভাজন সৃষ্টি হয়। শোকজ নোটিশে তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সন্তোষজনক জবাব না পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জবাব দেওয়ার পরেও সন্তোষজনক না হওয়ায় পুনরায় দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হতে পারে অথবা উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ হতে পারে বলে জানা গেছে। বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু বলেন, মোকলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক কিনা তা নীতিনির্ধারণী সভায় সিদ্ধান্ত হবে এবং প্রয়োজন হলে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হতে পারে।
এদিকে ৭ নং চরকাউয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে কাজী মোকলেছুর রহমান তোড়জোড় শুরু করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, অর্থের বিনিময়ে জেলা ও সদর উপজেলা বিএনপির একটি পক্ষের সঙ্গে আতাত করছেন। জানা গেছে, ইউনিয়ন বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের কথা শুনেই তিনি প্রার্থী হিসেবে সক্রিয় হয়েছেন। তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি দলের মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নেননি এবং আওয়ামী লীগের শাসনামলে সরকার বিরোধী আন্দোলনেও ছিলেন না।
পাঁচ বছর আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম সিকদারের সঙ্গে মিলে ব্যবসার উদ্দেশ্যে একটি কাঠের ঘর ভাড়া নিয়ে আওয়ামী লীগের দপ্তর হিসেবে পরিচিতি লাভ করার অভিযোগও রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য নেতাদের ছবি টানিয়ে আওয়ামী লীগ অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং কাজী মোকলেছুর রহমান সেই অফিস থেকে ব্যবসা পরিচালনা করেন।
কাজী মোকলেছুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত আছেন এবং কমিটি গঠন হবে শুনে প্রতিপক্ষ মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম বাবু বলেন, শোকজের জবাব সন্তোষজনক হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে আহ্বায়ক কি মনে করেন সেটি তার বিষয়। সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম সেলিম বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আতাত করে ব্যবসা কিংবা রাজনীতি করার প্রমাণ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।