ঢাকা, বুধবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২রা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি, সকাল ৬:৫৭
বাংলা বাংলা English English

বুধবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়


আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবস্থা বেশ সংকটপূর্ণ। এমন পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেল আমদানিতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সেই কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রায় কেনা জ্বালানি তেলের একটি বড় অংশ পাচার হয়ে যাচ্ছে, ফলে বাংলাদেশকে আরও বেশি তেল আমদানি করতে হচ্ছে এবং রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়ছে।

যদিও বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকার প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ করছে, তারপরও ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দামের বিশাল ব্যবধান রয়ে গেছে। ভারতের কলকাতা ও বাংলাদেশের মধ্যে ডিজেল-পেট্রলের লিটারপ্রতি পার্থক্য ২২ থেকে ২৫ টাকা। এই দামের ব্যবধানের কারণে বাংলাদেশের জ্বালানি তেল চোরাই পথে ভারতে পাচার হচ্ছে।

ডলার সংকটের কারণে আমদানি করা জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধেও হিমশিম খেতে হচ্ছে সরকারকে। সীমান্তেও গড়ে উঠেছে পাচার চক্র, যারা পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোর তেল ট্যাংক বাংলাদেশে এসে পূর্ণ করে। প্রতিদিন বিভিন্ন বন্দর দিয়ে প্রায় এক হাজার ট্রাক দেশে প্রবেশ করে, এবং তারা ফেরার সময় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে তেল নিয়ে যায়। স্থানীয় তেল ব্যবসায়ীরাও এই পাচারের সঙ্গে জড়িত, যারা গোপনে তেল বিক্রি করছে। এভাবে বিপুল পরিমাণ ডিজেল প্রতিবেশী দেশে পাচার হচ্ছে।

যদিও বিজিবির বাড়তি তৎপরতায় বেনাপোলসহ বিভিন্ন বন্দরে ডিজেল পাচারের প্রবণতা কিছুটা কমেছে, তবে তেলের দামের বিশাল পার্থক্যের কারণে পাচারের ঝুঁকি এখনো রয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই দেশের মধ্যে তেলের দামের পার্থক্য কমিয়ে আনা প্রয়োজন। এতে পাচারের ঝুঁকি কমবে, আমদানির চাপ কমবে, এবং বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় সম্ভব হবে।

পাশাপাশি পাচার প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পাচারে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশের অর্থনীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার স্বার্থে এ ধরনের অপচয় কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সব খবর