আজ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন – শুভ মহালয়া উদযাপিত হচ্ছে। মহালয়ার এই বিশেষ দিনে কৈলাসশিখর থেকে দেবী দুর্গার আগমনের বার্তা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে আনন্দের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। আজ থেকেই দেবী দুর্গার শক্তিরূপে পূজা শুরু হয়, যা পিতৃপক্ষের অবসান এবং মাতৃপক্ষের সূচনা নির্দেশ করে। মহালয়া দিনটি শারদীয় দুর্গাপূজার সূচনা হিসেবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
পুরাণ মতে, মহালয়ার দিন দেবতারা মহিষাসুরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ত্রিশক্তি ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বরের শক্তি থেকে নারীশক্তি দেবী দুর্গার সৃষ্টি করেন। দেবতাদের প্রদত্ত অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেন। মহালয়ার দিন দেবী দুর্গার চক্ষুদান সম্পন্ন হয় এবং এটি খারাপ শক্তির বিনাশ ও শুভশক্তির বিজয়ের প্রতীক হিসেবে পালন করা হয়।
বুধবার, ২ অক্টোবর, শেফালিঝরা শারদ প্রভাতে জলদকণ্ঠে চণ্ডীপাঠ ও পিতৃপক্ষের তর্পণের মাধ্যমে এই পুণ্যলগ্ন উদযাপিত হবে। এদিন চণ্ডীপাঠের মধ্যে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা রয়েছে, যা এই উৎসবের পবিত্রতা বাড়িয়ে দেয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, আজকের দিনে শরতের আকাশ-বাতাসে দেবী দুর্গার আগমনের সুর মন্দ্রিত হচ্ছে।
আগামী ৮ অক্টোবর, অকালবোধনের মাধ্যমে দেবী দুর্গার মূর্তিতে চক্ষুদান সম্পন্ন হবে, যা দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। পূজা চলাকালে ঢাক-ঢোল, কাঁসর-মন্দিরার আওয়াজে মণ্ডপগুলো মুখরিত হয়ে উঠবে, আর পুরোহিতের ভক্তিপূর্ণ মন্ত্রোচ্চারণ দেবী দুর্গার আগমনকে আরো শুভময় করে তুলবে। ১২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দেবী দুর্গা কৈলাসে ফিরে যাবেন, যা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি আবেগঘন মুহূর্ত।
এ বছর বাংলাদেশে দুর্গাপূজার মণ্ডপের সম্ভাব্য সংখ্যা ৩২ হাজার ৬৬৬টি, যার মধ্যে ঢাকার দক্ষিণ ও উত্তর সিটিতে যথাক্রমে ১৫৭টি ও ৮৮টি মণ্ডপ স্থাপন করা হবে। এছাড়া, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন, যা জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে অসচ্ছল মণ্ডপগুলোতে বিতরণ করা হবে।