টানা বৃষ্টি এবং ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে সম্প্রতি ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়। বন্যার্তদের সাহায্যার্থে রাজধানীসহ সারা দেশে ত্রাণ সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশব্যাপী মানুষ ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আয়োজিত গণত্রাণ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা সংগ্রহ হয়। এর মধ্যে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা খরচ করা হয় পূর্বাঞ্চলের বন্যার্তদের সাহায্যার্থে। বাকি টাকা কোথায় ব্যবহার হবে তা নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরে সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে অবশিষ্ট টাকা দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে, যা নতুন বিতর্কের জন্ম দেয়—এই টাকা কীভাবে ব্যবহার করা হবে।
সম্প্রতি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৮ কোটি টাকা ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়া হবে এবং বাকি টাকা উত্তরবঙ্গের বন্যার্তদের সাহায্যার্থে ব্যয় করা হবে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) গণত্রাণের অডিট শেষে জানানো হয় যে ফান্ডে কত টাকা আছে এবং এই টাকা কীভাবে খরচ করা হবে। সমন্বয়করা জানান, ৮ কোটি টাকা প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়া হবে এবং বাকি ১ কোটি ৯১ লাখ টাকা উত্তরবঙ্গের বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে খরচ করা হবে। আগামীকাল বুধবার (২ অক্টোবর) থেকেই এ ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানানো হয়।
অডিটর গোলাম ফজলুল কবির জানিয়েছেন যে, ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকার ফান্ড সংগ্রহ করা হয়েছিল, যার মধ্যে নগদ পাওয়া গেছে ৯ কোটি ৮৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ টাকা। বাকি টাকা মোবাইল ব্যাংকিং, প্রাইজবন্ড, ডলার এবং অন্যান্য মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত খরচ করা হয়েছে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা। বর্তমানে ব্যাংকের দুটি অ্যাকাউন্টে মোট ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা জমা আছে।
তিনি আরও জানান, ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অডিট কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যার মধ্যে শুধুমাত্র আর্থিক অডিট সম্পন্ন হয়েছে। পণ্য, পোশাক এবং নন-ক্যাশ অডিট করা সম্ভব হয়নি।