সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চরনারচর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামে মৎস্যজীবী আব্দুন নুর মিয়াকে ভাসান পানিতে মাছ ধরার কারণে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় খুনীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় স্থানীয় মিলনবাজারে এলাকাবাসীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে চার শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। এতে বক্তব্য রাখেন ইদ্রিছ আলী, নিহতের ছেলে শিপন মিয়া, আমীর হোসেন, মুক্তার হোসেন মুক্তা, আলী হায়দার, সিরাজ মিয়া এবং আব্দুল কাইয়ূমসহ অন্যান্যরা।
বক্তারা জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর সকালে নাসিরপুর গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে দিনমজুর মৎস্যজীবী এবং লৌলারচর নাসিরপুর গ্রামের জামে মসজিদের সাবেক ক্যাশিয়ার আব্দুন নুর মিয়া গ্রামের পশ্চিম পাশে একটি সরকারি ডোবায় মাছ ধরতে গেলে তাকে নিষেধ করে একই গ্রামের মৃত জবর আলীর ছেলে সুরুজ আলীর নির্দেশে তার সাত ছেলে। আব্দুন নুর বাড়িতে ফিরে এলেও কিছুক্ষণ পর সুরুজ আলী ও তার সাত ছেলে আব্দুন নুরের বাড়িতে এসে তাকে মাটিতে ফেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।
এই হামলায় গুরুতর আহত আব্দুন নুরকে প্রথমে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১৫ সেপ্টেম্বর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ২২ সেপ্টেম্বর তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ঘটনায় নিহতের ভাতিজা আব্দুল কাইয়ূম বাদী হয়ে ২২ সেপ্টেম্বর দিরাই থানায় সুরুজ আলীসহ তার সাত ছেলে এবং আরও দুজনের নাম উল্লেখ করে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে মামলার দীর্ঘ দিন পেরিয়ে গেলেও আসামিরা প্রকাশ্যে থাকলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনি। এ কারণে বাদীপক্ষ শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন এবং অভিযোগ করেন যে প্রভাবশালী আসামিরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।
এলাকাবাসী অবিলম্বে আব্দুন নুরের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসির রায় কার্যকর করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার এবং পুলিশ সুপারের কাছে দাবি জানান।
এ বিষয়ে দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, আব্দুন নুর হত্যাকাণ্ডের মামলায় চারজন আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন এবং বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।