ঢাকা, শনিবার, ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি, সন্ধ্যা ৬:৪০
বাংলা বাংলা English English

শনিবার, ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কলা বিক্রেতা থেকে কাউন্টার মাস্টার: মহাখালী এস আর পরিবহনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে আব্দুল খালেক


উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত পরিবহন প্রতিষ্ঠান এস আর পরিবহন, যার মহাখালী বাস কাউন্টারে নিয়মিত অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাখালীতে এস আর পরিবহনের কাউন্টারটি চালু হওয়ার পর থেকেই তৎকালীন ম্যানেজার মৃত আব্দুল মালেক ও অফিস সহকারী আব্দুল খালেকের দখলে ছিল। দীর্ঘদিন কাজ করার পর আব্দুল খালেক এখন কাউন্টার মাস্টারের দায়িত্বে রয়েছেন।

দীর্ঘ চাকরির অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে খালেক লক্ষ লক্ষ টাকা কোম্পানি থেকে নিজের নামে-বেনামে আত্মসাৎ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে বাস সার্ভিসিংয়ের ভুয়া বিল দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন এবং যখন কোম্পানির হিসাব রক্ষকরা এসবের জবাব চাইতেন, তখন খালেক কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যেতেন।

মহাখালী বাস মালিক সমিতি থেকে প্রতিটি বাসের জন্য জিবি/টোল ফি আদায় করা হয়। তবে খালেক প্রতিদিন ২-৫টি বাসের জিবির টাকা মালিক সমিতিতে জমা না দিয়ে নিজের পকেটে রাখতেন, যা কোম্পানির হিসাবের সঙ্গে গড়মিল সৃষ্টি করেছে। এছাড়া ঈদের সময় তিনি টিকিট নিয়ে দুর্নীতি করেন। মহাখালীর মেইন কাউন্টার থেকে আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা, এবং গাজিপুর শাখাগুলোর জন্য কোটা নির্ধারণ করা হলেও, খালেক সেই টিকিট অতিরিক্ত দামে বিক্রি করতেন, যেখানে তার খালাতো ভাই রাশেদ যাত্রী ম্যানেজের দায়িত্বে ছিলেন।

২০২৩ সালে ঈদুল আযহার সময়, খালেক নিষিদ্ধ হলেও নিজস্ব ফ্রিজ বার নিয়ে যান বাসের ইঞ্জিন বক্সে। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। সাধারণত অসহায় বা প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত সৌজন্য টিকিটও তিনি নিয়মিতভাবে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করতেন।

এছাড়া, ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে ছুটে যাওয়া প্রতিটি বাসের চালান থেকে খালেক ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত সুপারভাইজারদের কাছ থেকে আদায় করেন। অথচ এই সুপারভাইজাররা দিনে-রাতে পরিশ্রম করে ট্রিপ প্রতি মাত্র ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা উপার্জন করেন। ফিরতি ট্রিপের সময়ও তিনি একইভাবে অর্থ আদায় করেন, যা কোম্পানির নীতিমালার বিরুদ্ধে। টাকার বিনিময়ে তিনি সুপারভাইজারদের ট্রিপ পরিবর্তন করে দিতেন এবং তাদের জন্য নানা সমস্যার সমাধান করতেন।

কাউন্টারের পাশে অরিন পরিবহন কাউন্টারের ম্যানেজার সিপনের সঙ্গে ২০২০ থেকে ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত খালেক বেআইনি লেনদেন করেন, যা কোম্পানিকে না জানিয়ে রাতের বেলা ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা লেনদেন করতেন এবং এর বিনিময়ে কমিশন পেতেন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে তা বন্ধ করা হয়।

যখনই কেউ তার কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন করত, খালেক দাবি করতেন যে, কোম্পানির ডিজিএম আলতাফ হোসেন তার মামা এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা তার দেশের এলাকার মানুষ, ফলে তাকে বিশ্বাস করা হয়। তিনি এমনও বলতেন যে, তার ছাড়া মহাখালী কাউন্টার অচল।

আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হবে…..

সব খবর