বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে রংপুরে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে সুরতহাল রিপোর্টের গরমিল থাকায় সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ করেছেন মামলার তিন আইনজীবী। এই অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আবু সাঈদ হত্যা মামলায় আসামিভুক্ত করে গ্রেফতারসহ মামলাটি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
ময়নাতদন্ত রিপোর্টে আবু সাঈদের শরীরে শটগানের গুলির স্পিন্টার ও মাথার খুলিতে আঘাতজনিত ক্ষতের গভীরতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আবু সাঈদের মৃত্যু হয়েছে। এটি একটি হত্যাকাণ্ড বলে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে লেখা রয়েছে। মৃত্যুর আড়াই মাস পর ময়নাতদন্তের এ রিপোর্ট পাওয়া গেল।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবু সাঈদের কানের উপরের দিকে মাথার খুলিতে দৈর্ঘ্যে ৩ ইঞ্চি ও প্রস্থে দেড় ইঞ্চি আয়তনের আঘাতজনিত গর্ত ছিল, যেখান থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং রক্ত জমাট বাঁধা ছিল। এ ছাড়া বুক, পেট, পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ছোট ছোট শটগানের স্পিন্টারের গর্ত ছিল। সেখান থেকেও প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। মাথার আঘাত, শরীরে রক্তক্ষরণের কারণে আবু সাঈদ শকে চলে যান।
এদিকে আবু সাঈদের মৃত্যুর দিন তার সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আহমদ সাদাত ও পুলিশের এসআই তরিকুল ইসলাম। তারা ওই রিপোর্টে মাথায় আঘাতজনিত কারণে মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ওই মামলার আইনজীবী লক্ষ্য করেন সুরতহাল রিপোর্টে তথ্য গোপন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে সুরতহাল রিপোর্টের অনেক গরমিল রয়েছে।
বুধবার এই তথ্য জানিয়েছেন মামলার তিন আইনজীবী রাহানুজ্জামান, রায়হান কবীর ও শামীম আল মামুন। তারা বলেছেন, মামলার তথ্য গোপন করার অভিযোগের বিষয়টি আমরা আদালতকে জানাব যেন ওই মামলায় সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতের সঙ্গে জড়িত ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশকেও মামলার আসামি করে গ্রেফতার করা হয়। একই সঙ্গে তারা মামলাটি বিশেষ ট্রাইব্যুনালে নেওয়ার দাবি জানান।