কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরধরে প্রতিপক্ষের তিন দফা হামলায় ৯ জন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত সোমবার (২৩সেপ্টেম্বর) সকাল, বিকাল ও সন্ধ্যায় উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের নাপিতেরচর গ্রামে এসব হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় নারী, পুরুষ ও কিশোরসহ ৯ জন আহত হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ ধরে নাপিতেরচর গ্রামের মো. শমসের আলীর পুত্র মো. আঙ্গুর মিয়া (৪৮), মো. আবদুল খালেক (৩৮) ও মো. শাহজালাল (৩৫) গংদের ভোগদখলীয় পৈত্রিক সম্পত্তি জোর জবরদখল করে নেওয়ার চেষ্টা করে আসছে তাদের মৃত চাচা রহমত আলীর ছেলে মো. রাব্বানী মিয়া (৫৮), আবু কালাম (৩৫), আবু কাশেম (২৮) ও আনোয়ার হোসেন (১৮) সহ আবু কালামের ছেলে বাঁধন মিয়া (১৬)।
গত সোমবার সকালে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে প্রতিপক্ষের লোকজন আঙ্গুর মিয়া গংদের ভোগ দখলীয় জমি জোর জবরদখল করতে গেলে আঙ্গুর মিয়া ও তার ভাই শাহজালাল বাধা নিষেধ দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষের রাব্বানী মিয়া, আবু কালাম, আবু কাশেম (২৮), আনোয়ার হোসেন (১৮) ও বাঁধন মিয়া (১৬) দেশীয় মারাত্বক অস্ত্রসহ লোকজন নিয়ে স্থানীয় ইউসুফ মার্কেটের সামনে রাস্তায় আঙ্গুর মিয়া ও শাহজালালের উপর হামলা করে তাদের মারধোর করে রক্তাক্ত গুরুতর জখম করে। এসময় স্থানীয়রা দুজনকে রক্তাক্ত আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী বেলবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। এতেই প্রতিপক্ষ ক্ষ্যান্ত হয়নি, ওই দিন বিকালে প্রতিপক্ষ ফের আহত আঙ্গুর মিয়ার বাড়িতে গিয়ে হামলা করে আঙ্গুর মিয়ার ভাই খালেক মিয়া, আঙ্গুর মিয়ার ছেলে তাজুল ইসলাম (২৮), রাসেল মিয়া (১৮) ও মাসুদ মিয়ার ছেলে রানা মিয়া (২৭) কে মারধোর করে তাদের গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে এবং আঙ্গুর মিয়ার অপর ছেলে রুহুল আমিন (২০) কে মারধোর করে পার্শ্ববর্তী নদীর পাড় ফেলে রেখে আসে। এঘটনার পর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী বেলবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে তাদের ভর্তি করেন। এরপর ওইদিন সন্ধ্যার দিকে আহতদের বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে কাপড়চোপর নেওয়ার জন্য বাড়ি আসার পথে ইউসুফ মার্কেট সংলগ্ন স’মিলের সামনে রাস্তায় প্রতিপক্ষের লোকজন সৌহরাব উদ্দিনের স্ত্রী তানিয়া বেগম (৩৫) ও তাজুল ইসলামের স্ত্রী জুয়েনা বেগম (৩৫) কে মারধোর করে। স্থানীয়রা তাদেরকেও উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী বেলবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। আহত রানা মিয়ার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় গত মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করেন। অপর দিকে মঙ্গলবার (২৪সেপ্টেম্বর) বিকালে আহত আব্দুল খালেক’কে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য নরসিংদী জেলা হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
আহত মো. শাহজালাল বলেন, এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে কুলিয়ারচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত আবু কালামের ব্যবহৃত ০১৯১৪৫২৯২০০ নম্বর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করে যোগাযোগ করার চেস্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় প্রতিপক্ষের কারোর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাই তাদের কারোর বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
এব্যাপারে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সারোয়ার জাহানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।