অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আমাদের প্রিয় নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.) মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় যাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল অডিটোরিয়ামে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবি (সা.) ও ইসলামিক ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, মুসলিম উম্মাহ যদি একত্রিত হতে পারে তাহলে নতুন পৃথিবী উপহার দিতে পারবে। ইসরাইলের আগ্রাসন থেকে আল-আকসা উদ্ধার করতে সমর্থ হবে। মুসলিম বিশ্বে আমাদের সম্পদের প্রাচুর্য রয়েছে। আমরা যদি এসব সম্পদ বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে মুসলিম বিশ্ব নতুন শক্তি নিয়ে জেগে উঠবে।
তিনি আরও বলেন, হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন আল্লাহ তা’আলার রহমতস্বরূপ। তিনি ছিলেন মানবতার ও সমগ্র বিশ্বের নবি। তিনিই প্রথম মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার প্রায় ১ হাজার ৪০০ বছর আগেই তিনি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তার আগমনের আগে পৃথিবীতে মানুষের অধিকার বলতে কিছু ছিল না। মহানবি (সা.) সর্বপ্রথম ঘোষণা করেন, আরবের ওপর অনারবের কিংবা অনারবের ওপর আরবের, সাদার ওপর কালোর কিংবা কালোর ওপর সাদার বিশেষ কোনো মর্যাদা নেই। পৃথিবীর সব মানুষ সমান এবং আল্লাহ ভীতিই একমাত্র শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ড।
খালিদ হোসেন বলেন, মহানবি (সা.)-এর আগমনের আগে নারীদের কোনো সম্মান ও মর্যাদা ছিল না। বরং তাদের সব অনিষ্টের মূল হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু রাসুল (সা.) ঘোষণা করলেন, মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত। তার এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্বে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া, নবি করিম (সা.) পৃথিবীতে প্রথম যুদ্ধনীতি ঘোষণা করে বলেন, যুদ্ধের ময়দানে নারী ও শিশুদেরকে হত্যা করা যাবে না। মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাতে ধর্মযাজকদেরকে হত্যা করা যাবে না।
উপদেষ্টা বলেন, মহানবি (সা.) যেটা বলেছেন, সেটা বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। এর ব্যতিক্রম কখনও ঘটেনি। তিনি সমগ্র জীবনে তত্ত্বকে বাস্তবে রূপায়ণ করেছেন। আমরা যদি রাসুলের (সা.) আদর্শ অনুসরণ করতে পারি, তাহলে আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন আলোকিত ও মহিমান্বিত হবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসূর চাভোশি বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক মহানবি (সা.)-কে সারাবিশ্বের জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছেন। মহানবি (সা.) সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। তার চারিত্রিক মাধুর্যে মূর্তি পূজারিরাও আকৃষ্ট হয়েছে এবং তিনি বিধর্মী কাফের, মুশরিক ও মূর্তি পূজারিদেরকে ইসলামের পতাকাতলে আবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ইরান দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আয়োজিত এ আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সিলর সৈয়দ রেজা মীর মোহাম্মাদী।
এতে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আলহাজ মোহাম্মদ ইসমাঈল মিয়া, বাংলাদেশ ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা লুৎফর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।