কুড়িগ্রামের চিলমারীতে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী(ইজিপিপি) প্রকল্পে কাজ করেও ৪শ্রমিক মজুরি থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।ওই ৪শ্রমিকের দাবী তাদের রকেট নাম্বার পরিবর্তন করে মজুরীর অর্থ আত্মসাত করেছেন চেয়াম্যান ও মেম্বার। ইউনিয়ন পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দফায় দফায় যোগাযোগ করেও মেলেনি কোনো সমাধান। নিরুপায হয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের নিকট ইউপি চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তারা।
জানাগেছে,অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী(ইজিপিপি) প্রকল্পের আওতায় ২০২৩-২৪অর্থ বছরে উপজেলায় মোট ১হাজার ৮৫২জন শ্রমিক দৈনিক ৪০০টাকা মজুরির ভিত্তিতে সামাজিক মাটির কাজ করে আসছেন। এর মধ্যে নয়ারহাট ইউনিয়নে কাজ করেন ২৯৩জন শ্রমিক। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ১ম পর্যায়ের ৪০দিন ও ২য় পর্যায়ের ৩২দিন কাজ করে নয়ারহাট ইউনিয়নের শ্রমিকরা দৈনিক ৪শ টাকা হারে মজুরি পেলেও হতভাগ্য ৪জন শ্রমিক তাদের মজুরীর টাকা থেকে বঞ্চিত হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দফায় দফায় যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান না পেয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের নিকট ইউপি চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ওই ৪শ্রমিক।
অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে,উপজেলার সকল শ্রমিকের ন্যায় নয়ারহাট ইউনিয়নের শ্রমিকরা তাদের মজুরির টাকা পেলেও ইউনিয়নের নাইয়ারচর এলাকার মোছা. কদভানু বেগম,মো.রায়হান, মাসুদ রানা ও নুর ইসলাম তাদের ১ম ও ২য় ফেইস মিলে ৭২কর্ম দিবসের মজুরি পাননি। তাদের দাবী ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ও ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ তাদের ৪জনের রকেট নাম্বার পরিবর্তন করে মজুরী আত্মসাত করেছেন।
ভুক্তভোগী শ্রমিক মো.রায়হান বলেন,আমি অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী(ইজিপিপি) প্রকল্পের লেবার সর্দার। প্রায় ৭/৮বছর ধরে এ প্রকল্পের সাথে আমি জড়িত।বিগত কয়েক বছর ঠিকমতো আমার মজুরির টাকা পেলেও গত ১৬০ কর্মদিবসের টাকা পায়নি। তিনি আরো বলেন,ওই ১৬০দিনের মজুরির টাকা কেন পেলেন না খোঁজ নিয়ে দেখেন তার নাম ঠিকানা ঠিক রেখে রকেট নম্বরটি পরিবর্তন করে টাকা তুলে নেয়া হয়েছে।এ বিষয়ে আমি চেয়ারম্যানের কাছে গেলে অসদাচরণ করে তিনি কলাগাছ প্রতিকের চেয়ারম্যান নন, নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান,কি করার আছে করো বলে ধমক দেন।
ভুক্তভোগী অন্য ৩ শ্রমিক নুর ইসলাম,মাসুদ রানা ও কদভানু বেগম জানান,দীর্ঘদিন চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে ঘুরেছি। টাকা পাবো বলে তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন,কিন্তু পাইনি। স¤প্রতি তালিকা তুলে তারা দেখতে পান তাদের দেয়া রকেট হিসেব নাম্বার পরিবর্তন করে টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। নিজেদের শ্রমের মজুরি পেতে জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ করেছি।
টাকা তুলে নেয়া নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে ৪টি নাম্বারের মধ্যে ৩টি বন্ধ পাওয়া গেছে। সচল থাকা নাম্বারটি বড় চরের শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির। তবে তিনি ইজিপিপি প্রকল্পের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নয়ারহাট ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো.আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন,আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে ওয়ার্ড সদস্য হামিদ’র সাথে সমস্যা ছিল তিনি সমাধান করেছেন।
এবিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন,আমি কুড়িগ্রামে সবে মাত্র যোগদান করেছি। অভিযোগ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।